Friday, August 12, 2011

বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি ও আমাদের পরামর্শ ঃ

edmission-test.jpgবিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি । শিক্ষার্থীদের এক যুগ ধরে বুনে আসা এক স্বপ্ন। এই স্বপ্ন পূরনে সময়ের কাঁটা কড়া নাড়ছে শিক্ষার্থীদের দোড়ে। শুরু হয়ে গেছে ভর্তি যুদ্ধ। ২৭ শে জুলাই উচ্চ মাধ্যমিকের ফলাফল প্রকাশের পর এবং পরীক্ষা শেষে দীর্ঘদিন ধরে ভর্তি যুদ্ধের প্রস্তুতি নিয়েছে শিক্ষার্থীরা। এখন এই যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত শিক্ষার্থীরা। চলছে শেষ মুহুর্তের মহড়া। এই মহড়াকে শক্ত এবং প্রস্তুতির পূর্ণতাকে বাড়িয়ে দিতে আমাদের এই আয়োজন-আপনার পাঠের পরিবেশ ঃ
* যেখানে আপনি পড়তে কমফোর্ট ফিল করবেন, সেখানেই পড়বেন। সবসময় একটি জায়গায় বা পরিবেশে পড়তে চেষ্টা করবেন।
* আপনি নীরব স্থানে পড়ার চেষ্টা করুন। যেখানে আপনাকে কোন শব্দ ডিষ্টার্ব করবেন না।
* এমন জায়গায় পড়তে বসুন যেখানে আপনি সর্বোচ্চ মনোযোগ দিয়ে পড়তে পারবেন।
* পড়ার সময় টিভি, রেডিও, কম্পিউটার, মিউজিক প্লেয়ার অফ রাখুন অথবা এগুলো থেকে দুরে নীরব কোন স্থানে পড়তে বসুন।
আপনার প্রস্তুতি ও আমাদের পরামর্শঃ
* আপনাকে আপনার পরীক্ষা সম্পর্কে স্পষ্ট ধারনা থাকতে হবে।
* পরীক্ষার আগেই আপনাকে পরীক্ষার সিলেবাস ভিত্তিক বিষয়, প্রশ্ন কাঠামো এবং নম্বর বন্টন সম্পর্কে ধারনা থাকতে হবে। তখনই আপনি আপনার প্রস্তুতি কতটুকু যথার্থ হয়েছেতা উপলব্ধি করতে পারবেন।
* পড়াশুনার জন্য সর্বোত্তম এবং সর্বোচ্চ সময়টুকু আলাদা করে এবং বাকি সময়ে অন্যান্য কাজকর্ম খাওয়া-দাওয়া, ঘুম ….. ইত্যাদি প্রাত্যহিক কাজ সেরে ফেলবেন।
* প্রস্তুতির শেষ মুহুর্তে এসে নতুন কোন পড়া পড়বেন না।
* অতিরিক্ত পড়া উচিত নয়। এতে মস্তিস্কের উপর চাপ সৃষ্টি হয়। মস্তিস্ক ক্লান্ত হয়ে পড়ে। মস্তিস্ক পড়া মেমোরাইজ করতে পারে না।
* পড়ার সময় একটি টার্ম শেষ না করে হুট করে অন্যটায় চলে যাবেন না।
* কখনই শুয়ে শুয়ে পড়বেন না।
* পড়ার সময় ভারি খাবার গ্রহন করবেন না।
* একটানা এক ঘন্টা পড়ার ভেতর ৫/১০ মিনিট বিরতী নিয়ে আবার পড়া শুরু করুন।
* পরীক্ষার প্রয়োজনীয় সামগ্রী ( যেমন-পেনসিল, কলম , ক্যালকুলেটর, এডমিট কার্ড, টাকা……..ইত্যাদি) আগে থেকে প্রস্তুত করে রেখে দেন।
* পড়ার সময়টাকে বিভিন্ন ভাগে ভাগ করে পরিকল্পনা মত পড়-ন।
* যে কোন প্রয়োজনে বন্ধু-বান্ধব আত্মীয় স্বজন, ভার্সিটিতে পড়-য়া বড় ভাইয়া / আপুর সাহায্য এবং পরামর্শ নিবেন।
* পরীক্ষার শুরুর আগের দিনগুলোতে খুব বেশী করে পড়তে যাবেন না। যদি যথার্থ প্রস্তুতি থাকে।
* ঘুমোতে যাবার আগে ঐদিনের পড়াগুলোর উপর একটু চোখ বুলিয়ে নিতে পারেন।
* পড়ার ফাঁকে ফাঁকে কিছু রিক্রিয়েশনের ব্যবস্থা রাখবেন। নয়তো পড়াটা আপনার নিকট মনোটনাস বা বোরিং ফিল হতে পারে।
* পরীক্ষার আগের দিন রাত জেগে পড়বেন না।
* রিভিশনের জন্য আপনি স্কিমিং ও স্ক্যানিং পদ্ধতি অবলম্বন করতে পারেন।
* আপনার চারপাশের সামান্য বিষয়/ঘটনা আপনার মনকে এলোমেলো করে দিতে পারে। তাই মোবাইল ফোন, আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধবদের গল্পগুজব, সংবাদপত্র, ম্যাগাজিন, ইত্যাদি থেকে দুরে ও সচেতন থাকবেন।
* পড়ার টাইম টেবিল এমনভাবে প্রস্তুত করুন, যেন পরীক্ষার পূর্বে রিভিশনের যথেষ্ট সময় থাকে।
* এবং মনে রাখবেন -”চৎবঢ়ধৎধঃরড়হ চৎবাবহঃং চড়ড়ৎ ঈড়হফরঃরড়হ”
আপনার খাবারঃ
* আপনাকে পরীক্ষার পূর্ব প্রস্তুতির সময়ে খাবার গ্রহনের ক্ষেত্রেও সর্তক থাকতে হবে। কেননা জীবানুযুক্ত যে কোন খাবার আপনার অসুখের কারন হতে পারে এবং আপনার পরীক্ষাকে বাধাগ্রস্থ করতে পারে।
* পুষ্টিযুক্ত খাবার গ্রহন করুন। সতেজ ফলমুল খাবেন এবং পর্যাপ্ত পরিমানে পানি পান করুন। খাবারের সময় পড়বেন না।
* খেতে ইচ্ছা করলেও কোন কিছু অতিরিক্ত খাবেন না।
* ফুটপাতের ধুলাবালু ও জীবানুযুক্ত খাবার গ্রহন থেকে বিরত থাকুন।
* পরীক্ষার পূর্বে কখনই বেশী করে চা-কফি বা ক্যাফেন যুক্ত খাবার খাবেন না।
* প্রস্তুতির দিনগুলোতে সকালের নাস্তা ভালভাবে করবেন। মনে রাখবেন এটা আমার সারাদিনের মস্তিস্কের জ্বালানী।
আপনার বিশ্রাম ও ঘুম ঃ
* পরীক্ষার পূর্বে এবং চলাকালীন সময়ে নিয়ম করে ৬ ঘন্টা ঘুমাবেন। মনে রাখবেন পর্যাপ্ত ঘুম আপনার পড়াকে মেমোরাইজড করতে সাহায্য করে ।
* উদ্বেগের কারনে ঘুম না হলে কখনই ঔষুধ বা উদ্দীপক ব্যবহার করবেন না।
* ঘুমোতে যাওয়ার আগে নিজেকে টেনশনমুক্ত করে প্রশান্ত মনে ঘুমোতে যাবেন ।
* ২/১ দিন ঘুম কম হলেও এত উদ্বিগ্ন হবার কিছু নেই।
অভিভাবকদের দায়িত্বও কম নয় ঃ
* পরীক্ষার সময় আপনার সন্তানকে যতেœর ভিতর রাখুন।
* আপনার সন্তানকে সবসময় উৎসাহ দিন।
* পরীক্ষার সময় আপনার সন্তানকে রাত জাগতে দিবেন না।
* পরীক্ষার প্রশ্ন পত্র নিয়ে আপনার সন্তানকে ঘাটাঘাটি করবেন না।
* তাকে পড়াশুনা ব্যতীত অন্য কোন কাজ করতে দিবেন না।
* পরীক্ষার দিন তার প্রয়োজনীয় বিষয় (যেমন-এডমিট কার্ড, পেনসিল, কলম, ক্যালকুলেটর, টাকা ……….. ইত্যাদি) আপনি গুছিয়ে রাখুন।
* পরীক্ষা খারাপ হলে তাকে বকা ঝকা করবেন না। তাকে আশ্বাস দিন এবং পরবর্তী পরীক্ষা ভাল করার জন্য উৎসাহ দিন।
* আপনার সন্তান যেন পরীক্ষা নিয়ে অতিরিক্ত মানসিক চাপ না নেয় এ বিষয়ে সচেতন থাকবেন।
* আপনার সন্তান যেন সুন্দর পরিবেশে মনোযোগ দিয়ে পড়াশুনা করতে পারে এ বিষয়ে আপনি সচেতন থাকুন।
আপনার পরীক্ষার দিনঃ
* পরীক্ষার দিন নিজেকে রিলাক্স মুডে রাখতে চেষ্টা করুন। ইতিবাচক চিন্তা করুন। অস্থির হবেন না। নিজেকে শান্ত রাখুন।
* বাসা থেকে বের হবার আগে দেখে নিন আপনার এডমিট কার্ড সহ আপনার প্রয়োজনীয় সকল জিনিস সাথে নিয়েছেন কি না।
পরীক্ষার হলে আপনার করণীয়ঃ
* প্রশ্ন যতটুকুই কমন পড়-ক মাথা ঠান্ডা রেখে উত্তর দিবেন।
* একটি প্রশ্নের উত্তর করার সময় কোনক্রমেই অন্য প্রশ্ন নিয়ে মাথা ঘামাবেন না।
* প্রশ্নে কি চাওয়া হয়েছে তা ভালভাবে বুঝে উত্তর লিখুন।
* যেহেতু পরীক্ষার হলে সময় খুব অল্প তাই প্রথম দিকে জানা প্রশ্নের উত্তরগুলো দেওয়া উচিত।
* অংক/চিত্র অঙ্কন করার জন্য যতটুকু জায়গা দেওয়া হয়েছে এতেই স্পষ্ট করে লেখা এবং অঙ্কন করা উচিত।
* একজাম পেপার জমা দেওয়া পূর্বে ২/৩ বার দেখে নিন কোথাও কোন ভুল-ত্র”টি আছে কি না। পরীক্ষার শুরুর পূর্বে কিভাবে কতক্ষন সময়ে ভিতর পরীক্ষা দিবেন তার একটা পরিকল্পনা করে নিন।
* প্রয়োজনে পরীক্ষার হলে ঔষধ/পানি নিয়ে যাবেন।
* নির্ধারিত সময়ের পূর্বে পরীক্ষার কেন্দ্রে উপস্থিত হবেন।
একটু বাড়তি সচেতনতাঃ
* যে কোন ধরনে দুর্ঘটনা সম্পর্কে সচেতন থাকুন। সব সময় নিজেকে সেইভ করে রাখুন।
* পারিবারিক ও অন্যান্য সমস্যা থেকে পরীক্ষার এই সময়টুকুতে যেভাবে হোক নিজেকে দুরে সরিয়ে রাখুন। কোন ঝামেলায় জড়াতে যাবেন না।
* কোন বিষয়ে এ মুহুর্তে ইমোশনাল হবেন না।
* এফেয়ার এবং সংশ্লিষ্ট বিষয় থেকে পরীক্ষার সময়টুকুতে নিজেকে দুরে সরিয়ে রাখুন।
* পরীক্ষা, পড়াশুনা বাদ দিয়ে অন্য কোন বিষয়ে চিন্তা-ভাবনা করবেন না। এমনকি পরীক্ষা নিয়েও বাড়তি দুশ্চিন্তা করবেন না।
আত্মবিশ্বাসটা যে খুব দরকারঃ
প্রচন্ড ইচ্ছা শক্তির কারনেই সম্রাট নেপোলিয়ন বিশ্বজয় করেছিলেন। জর্জ বার্নার্ড শ’ মাত্র ৫ বছর স্কুলে পড়ে বিশ্ববিখ্যাত লেখক হয়েছেন। ষ্টিফেন হকিং পঙ্গুত্বকে পেছনে ফেলে হয়েছেন বিশ্ব বিখ্যাত বিজ্ঞানী। আত্মবিশ্বাস রাখুন নিজের উপরে। আপনিও পারবেন ।


 সুত্রঃ www.hello-today.com

No comments:

Post a Comment